বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৭

দুলে ওঠে তোমার প্রদীপ

0

এই যে বকুল ফুল, আপনাকে বলছি
আজ বড় বিশ্রী দিন, অতি শান্তভাবে
চোখ ফোটাতেই মনে হচ্ছিল ফের৷

রূপবতী দুপুরের পেটে ঘটছে আমার বিস্তার। যে যার আকাশের নিচে, তবু মস্তিষ্কজুড়ে শুধু তোমার নিবাস, প্রিয় বনবিড়াল!

সূর্য উঠলে গুলি চলে। চালকের হারিয়েছে ভাষা। খোলা বারান্দায় অকারণ ঝুলে আছো দাঁতব্যথা হয়ে। পর্দা উঠছে, পর্দা নামছে; কিছুটা ঝপাৎ ঝপাৎ। ঝোলা কাঁধে হেঁটে যেতে যেতে ডেকে ওঠে কেউ,

দ্বিজেন… দ্বিজেন… প্রকৃতি প্রাণের নাই!
দুনিয়াটাকে দুই হাতে তুলে
তোমার দিকে ছুঁড়তে ইচ্ছে করছে…

—সাইলেন্স। মোর সাইলেন্স প্লিজ। শান্ত হয়ে বসুন। সাইলেন্সার আসছেন। হৃৎপিণ্ডের উল্টোদিকে বালিশ পাতা আছে। ছোট্ট কুহুতান হতে পারে৷

সারি সারি গাছ। সুউচ্চ তার গ্রীবা। একটা হরিণ তারস্বরে চিৎকার করে ছুটছে। সমুখে শিকার, পালাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের সকালে, যতক্ষণ না পর্যন্ত ঢেউ আমাকে ছাপিয়ে যায়— অপেক্ষা করুন; একটা সূর্যদয়ের। বেঁচে উঠবেন।

নিরাবরণ, শূন্য, সময়। অনেকগুলো পোকা চামড়ার উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। ওদের পাখা আছে। তীব্র সানশেইড ধরে উড়ে যাচ্ছে পাখি। কুকুরের পাশে একটা মানুষ, উড়নচণ্ডী— নিঃশব্দে বয়ে যায়!

আর আমার ঘরে দুনিয়াদারি নিলামে তুলে ‘পাখিসব করে রব’। এই কোলাহল জটলা পাকায়, তবু দূরের বন্ধনী থেকে কিছুটা ঘ্রাণ— হালকা—। প্রকাণ্ড এক ঋতুর ছায়ায় বেড়ে উঠছে৷

কেন এত অভিমান, পড়ে থাকে ছায়া তার বিবর্ণ-বিস্তৃত চোখে। পুড়ে যায় বনভূমি বেবাক অহমে। তার পাশে, তুমি শুকরছানা বুকে চেপে নির্বিকার। ঘনত্ব বাড়ে আর দুলে ওঠে তোমার প্রদীপ।

—কতোটা রোদের সাথে
মিশে যেতে পারো তুমি মেঘ?

ঘোলাজল ভাসতে ভাসতে তোমার কাছে পৌঁছে যায়। বুঝতে পারি। প্রয়োজন নেই পুরাতন তর্কের। অযথা প্রজাপতি! বৃথা অক্টোপাসের মতো বন্ধু ছিল যারা, প্রণাম জানিয়ে ফিরে এসে ভাবি, জীবন দেখায় যেন রঙধনু। অসুস্থ হয়ে কী লাভ, যদি তোমার শুশ্রূষা না পাই!

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

জন্ম ৩০ ডিসেম্বর; বাঙলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায়। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সম্পাদনা করছেন শিল্প-সাহিত্যের অন্যতর লিটল ম্যাগাজিন ‘বিন্দু’। কবিতা, প্রবন্ধ ছাড়াও তিনি লিখেছেন নতুন ধরনের আখ্যানধর্মী গদ্য৷ সাম্য রাইয়ানকে নিয়ে ভারতের প্রখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা ‘তারারা’ বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের ‘মনমানচিত্র’, ভারতের ‘এবং পত্রিকা’ তাকে নিয়ে বিশেষ একক সংখ্যা ও বাংলাদেশের প্রখ্যাত লিটল ম্যাগাজিন ‘নিসর্গ’ বিশেষ মূল্যায়ন (ক্রোড়পত্র) প্রকাশ করেছে৷ ভারতের নব্বই দশকের কবি সুবীর সরকার সাম্য রাইয়ান প্রসঙ্গে ‘সাম্যপুরাণ’ শিরোনামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।

প্রকাশিত গ্রন্থ: সুবিমল মিশ্র প্রসঙ্গে কতিপয় নোট [গদ্য, ২০১৪]; বিগত রাইফেলের প্রতি সমবেদনা [কবিতা, ২০১৫]; মার্কস যদি জানতেন [কবিতা, ২০১৮]; হলুদ পাহাড় [কবিতা, ২০১৯]; চোখের ভেতরে হামিং বার্ড [কবিতা, ২০২০]; লোকাল ট্রেনের জার্নাল [গদ্য, ২০২১]; লিখিত রাত্রি [কবিতা, ২০২২] ও হালকা রোদের দুপুর [কবিতা, ২০২৩]; জলের অপেরা [কবিতা, ২০২৪]; সকল প্রশংসা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের [উপন্যাস, ২০২৫]৷ সম্পাদিত গ্রন্থ: উৎপলকুমার বসু [নির্বাচিত রচনা ও পর্যালোচনা, ২০২২]; জন্মশতবর্ষে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ [পর্যালোচনামূলক প্রবন্ধ সংকলন, ২০২৩]; শম্ভু রক্ষিত: পাঠ ও বিবেচনা [নির্বাচিত রচনা ও পর্যালোচনা, ২০২৫]।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।