বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২

বেটারি গলি ও মরীচিকা মাঠের অনন্য যাত্রা : দিপংকর মারডুক

0

Motif-01

বেটারি গলি : ২৬


সন্দেহ হতে হতে কেটেছে হৃদয়ের জ্বর ও আত্মার নবায়ন
দেরিতে হলেও হয়েছি পুনরুদ্ধার—জানি না অচেনা লণ্ঠন
কম্পিত বনের গন্ধ। এখন দ্বীপ টলমলে। কতো আর
দেখার বিলাপ কলহ থেকে ফিরেছে সচিত্র রমণে?

যেখানে সুনির্মল পার্বত্য আশ্রয়—অন্ধকারের আলপনা,
কী হারিয়ে গৃহমালা ও পাশাপাশি নিষিদ্ধ হত্যার কোচপানা
কিন্তু হতে পারত জীবনের যথেষ্ট সমতল স্ফটিক কিংবা
তরঙ্গের শরৎকাল নিয়ে একটা আচ্ছাদন পাতার পতন পর্যন্ত

এবং দেখি একটা অনুভব, বেদনার পালকের মতো আছে মনোরম
শুকনো যে ফসল—কাটার জন্য যত্রতত্র মেলেছে নির্বিকার দৈর্ঘ্য
তাকে তুমি কেন মেঘের কোণে একা দেখাও মৃতের বানান
হে সারাদিন, অস্ত্রের সূচিকর্মে রাখো পায়ের সমস্ত প্রসারণ

যদিও এসব খণ্ড খণ্ড আগুনের উল্লাস প্রয়োজনের
বিপরীতে অবরুদ্ধ প্রেমকে করেছে জ্ঞানী এবং জিজ্ঞাসা


বেটারি গলি : ২৭


তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আপনি কোন প্রজ্ঞার জ্যোতি অনুকরণ করেন। আমি উত্তর না দিয়েও বলেছিলাম—ক্ষুধা, সূর্যের প্রদক্ষিণ ও ব্রণের জ্বল জ্বল স্পেস কিংবা বৃক্ষশিখার লোভনীয়তায় মরীচিকা চেয়েছি। কিন্তু আমি অন্ধ! পাপড়ির গোপন অবলম্বনে সমস্ত উত্তর ক্ষমার নির্মাণে পড়বেন। যে মৃদু জলপাত্র মূলতঃ পরিচিত। যেটুকু ভাসমান আপনার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করা স্তন প্রদর্শনীতে—

হে আলোচ্য সেলস্ গার্ল, এ দেহ আজ কলঙ্কের অধিক উড্ডীন। হালদা, কর্ণফুলী বরং সুবর্ণনদী—আপনার কথোপকথনের ছায়ায় শেষবধি পাথরের অসলতা পেয়েছে। দেখেন, পৃথিবীর কেমন মাতৃত্ব। প্রসবের ব্যথা ও কষ্ট নিয়ে ভুলে গেছে ভূমিশত্রুর বিধান।

আপনি জানেন কেউ কেউ আজ অন্য কেউ। তবুও টুকে রাখি ক্রিয়াবর্ণ।

সতেজ নিরপেক্ষতায় রেল স্লিপারের কাতরতা ভেবে—


বেটারি গলি : ২৮


তবু পার করি তরুণ কসাইখানা
শীতগুচ্ছ হস্তমৈথুন সমেত, যার
কিছুক্ষণ বাতাস—হৃদয়ের গর্ভকেশর।
ছয়তলা থেকে দূর এই প্রাণ কাঁপা
ভাষার বিচ্ছুরণ—
………………..তুমি স্ফুরিত ক্রীতদাস
………………..মাছের শরীর মেখে শিখাও
………………..তালবন, ঝুমকা অতঃপর
………………..অনাবিল পাখি

এখন নেই সেইসব দিনেরা, একা এক
ঘাসের শিকল পড়ে স্মৃতিতে আছি
তুমি যদি হও অষ্টাদশী, প্রস্তুতিহীন
বৃষ্টির হরফে কৈলাশের পার্বতী—


বেটারি গলি : ২৯


বৃদ্ধ অবতার আমি, গণমান সুরে গাই
শিরার উচ্চগ্রাম। যারা পেয়েছে বিন্যাস
এই পচনশাসিত কর্মের শাদা শাদা মুখ—

যুবা হে স্বয়ম্ভু, আরোগ্যকালীন মর্মে কেন নাই
পরিত্যক্ততা? একটি বিনাবৃষ্টির চৈত্রমাসে
মধ্যাহ্ন হও। হও ছাল-বাকলের লাজের মতো
উপজীব্য—
তবে আমি উপশম নিয়ে গুপ্তচর হবো।

মেঘের প্রখরতা, বায়ুতন্তু ও প্রলম্বিত পাহাড়
থেকে নামে সিংহ উৎসব। তা— নাকি বিখণ্ডিত,
তখন দ্যাখা যায় সাঁতারের অপ্সরা, এসো পাহাড়
দীর্ঘ নীরবতা—যার পিছু পিছু গেছি তোমার বন্দরে
বলেছি পরিশেষ, রাত্রিস্নানের বনবেষ্টিত কাঁটাতার সুর


বেটারি গলি : ৩০


ক্ষেত্রগুলো পরিমাপ করে বৃষ্টি পড়ছে
সারিবদ্ধ অন্তর্বাসের বৃষ্টি—যেনবা এই
গোষ্ঠঘাটের প্রাতে বাতাসবাহিত তোমাকেই
কেন্দ্র করে। —ওঠে আর্তনাদ ছিঁড়ে ক্ষান্ত
তৃণভূমি, একটি ঘটনা নদী; যা গাঢ়তর
চিরকালই সবুজ, তবু নরম ঘাস জানে স্বাস্থ্যবতী।
কীভাবে হাসে ষড়যন্ত্র—নিচে, আরো নিচে—
আবেশের দাবানল মুহূর্তে।

তুমি দেখাও নিশ্ছিদ্র বন, ঘ্রাণের অবকাশ

এই যে পৃথিবী
তার সূক্ষ্ম দৃষ্টির কাছে রাখি নিম্নগামী নুড়ি
যারা আজ কুকুরের মতো উঁচু
এবং দ্যুতিময় পেয়েছে সকৃতজ্ঞ উন্মাতাল
তাদের আর্শিবাদপুষ্টতায় অনাগত হয় প্রেম;
জানি তুমি ভ্রমণ,
প্রার্থনা অব্দি ধ্বনি ও মর্মর নিয়ে হও অন্ধকার রাত্রি
এতো যে যাই, বারংবার যাই, তবুও তোমার পাণ্ডুহারা
ঘুমে জেগে থাকি—যতদূর তুমি জলজ ছায়াপথে

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

কবিতা চর্চা করেন। সম্পাদনা করেন ‘হারপুন’ নামের একটি সাহিত্য পত্রিকা।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।