বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫

আমার আস্তিন গলে বেরিয়ে আসা শালিকেরা : মাসুদার রহমান

0

Motif-01

লোকালয়ে বাঘ কেন বারবার আসে


ডোরাকাটা সন্ধ্যেরা হামাগুড়ি দিয়ে নেমে এসে
হিংস্র থাবায় আঁচড় কেটেছে অন্ধকারের পিঠে

জ্বলে ক্ষতের জোনাকি

অনুদিদি, ভর সন্ধ্যেবেলা
একাকীত্ব
তোমার ভরাট বুকে স্তন্যপান করে

দুলাভাই যাক দূর গঞ্জের হাটে

এমন সন্ধ্যেরাতে লোকালয়ে
বাঘ আসে
কেউ তো দেখেনি খুলে চাঁদের উল্টোপিঠে
দগদগে ডোরাকাটা রহস্যের দাগ।


আমার আস্তিন গলে বেরিয়ে আসা শালিকেরা


তোমাদের টিন শেডে যত শালিক আমার আস্তিন গলে
ওরা সব বেরিয়ে পড়েছে
তারপর খুঁজে খুঁজে তোমাকে কী পেল?
ওরা জানে রোদের দুপুর জুড়ে কে একা বারান্দায়
মুখে কার বিষণ্ণতা বিন্দু বিন্দু ঘাম

সেহেতু বাতাসে ওড়ায় ওরা খয়েরি রুমাল


বড়ো আপার গোলাপ কর্মে গ্রীলের জানালা


বড়ো আপা প্রতিটি সন্ধ্যার কাছে গোলাপ ফোঁটাও
পাঁপড়ি মেলে ঢেলে দাও সেন্টের স্প্রে
তুমি জানো, তাতে করে সন্ধ্যাও পথ ভোলে
সন্ধ্যা রাত্রি যায়
জানো নাকি, বালক মাত্র ধ্যানী জানালার গ্রীল!


বাংলোর রেলিং-এ ওড়ে বিভূতিভূষণের পাঞ্জাবি


সবুজ মদের গ্লাস হাত থেকে গড়িয়ে গিয়েছে লোকালয়ে
তাই বনরক্ষীর চাকুরি কিনছে এতো লোক
ভরিয়ে তুলছে বুক সেলফ

অরণ্য ভ্রমণে এসে মনে হয়, এক্ষুনি এই পথে
হেঁটে গেছে তার ভারি গামবুট
বাংলোর রেলিং-এ উড়ছে তার পাঞ্জাবি ধোঁয়া ও চুরুট


জিরাফ রোদের ভোর


জিরাফ রোদের মধ্যে হেঁটে যাচ্ছে সারি সারি ভোর
বাছুর দৌড়ের মাঠ— কম্পোজিশন ফিরিয়ে নাও
খয়েরি ভ্যালভেট পোকা থেতলিয়ে যাবে
খড়বাহী শালিক তুলছে শীত ব্যালকনির খয়েরি শেমিজ, চাঁদ উঁকি দেবে
সবুজ পাতার দৃশ্যে যদি পাখি ডেকে ওঠে, যদি কোন বউ-কথা-কও
অসমাপ্ত চিত্রনাট্য রচিত বিবিশকাল হরিণের পিঠে
শেষতক সাদা ওই বাড়িটির ভোরবেলা জুড়ে জিরাফ রোদের মধ্যে হেঁটে যাচ্ছে ভোর

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

কবি জন্ম ১সেপ্টেম্বর ১৯৭০। সোনাপাড়া, পাঁচবিবি, জয়পুরহাট। লেখালেখির উন্মেষকাল নব্বই দশক। প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৫টি। এর মধ্যে কবিতার বই ১২টি। সম্পাদক হিসেবেও যুক্ত আছেন বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকার সঙ্গে।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।