শনিবার, অক্টোবর ১২

টোকন ঠাকুরের ধারাবাহিক : জার্নি অব কাঁটা : পর্ব ১৭

0

আগের দিনে ডায়েরি লেখা হতো। ডায়েরি লিখত কেউ কেউ। আমিও ছোটোবেলায় ডায়েরি লেখা শুরু করি। জীবনের দৈনন্দিনতা লিখে রাখা আর কি! ডায়েরির বাংলা বলা হতো দিনলিপি। আমি তো যা লেখার লিখতাম রাতে, তবু কেন যে নাম দিনলিপিই, জানি না। নিশিলিপিও হতে পারত। হয়নি। হয়নি শুনলেই মনে হয়, আহা, ‘সেই সুরবালা আমার কীইনা হইতে পারিত,’ জোড়াসাঁকোর ছেলেটার তা হয়নি। তো দিনলিপির কথা বলছিলাম। কী, ডিমলিপির কথা বলছিলাম? না না, ডিমলিপি না, ড্রিমলিপি। ড্রিমলিপি আবার কী? ড্রিমলিপি কি স্বপ্ন লিখে রাখা? ডায়েরির পৃষ্ঠা জুড়ে দিনলিপি লিখেছি, ড্রিমলিপি কোথায় লিখে রাখব? আর আমার দৈনন্দিনতার ড্রিমলিপি যা যা, তা কি খুব লিখে রাখা দরকার? নিশ্চয়ই দরকার, কেন না, আমার তো খুব ঝোঁকই রয়েছে স্বপ্ন-রোপণের দিকে, আমি স্বপ্নের বীজপত্র রোপণ করতে আনন্দ পাই। বীজপত্র একদিন অঙ্কুরিত হবে। ছোট্ট বীজপত্রেই তো থাকে মহীরুহের শালপ্রাংশু সম্ভাবনা। সম্ভাবনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। হয়তো একদিন স্বপ্নগাছ জন্মাবে। স্বপ্নগাছের বাগান হবে। স্বপ্নবাগানে উড়ে আসবে সেই প্রজাপতি, যার ডানার খোপের কালারফুল-অন্ধকারে আমি একদিন ঘুমোতে চেয়েছি। চাইলেই তো আর হলো না। আমি তো চেয়েইছি, হয়তো প্রজাপতিও চেয়েছে, সেরকমই মনে হতো প্রথম দিকে। কিন্তু একদিন, প্রজাপতি উড়ে গেছে। আমার ঘুমোবার স্যানাটোরিয়াম উধাও হয়ে গেছে। আমার নির্ঘুম রাত্রির জানালায় উড়ে আসবে রঙিন ডানা, ভাবতাম, ভাবি, ভাবতেই থাকি কিন্তু প্রজাপতি আর আসে না। আমি ইনসমনিয়ার রোগী হয়ে যাই। তাই বাগান বানাই। স্বপ্ন রোপণ করি। স্বপ্নের বাগান বানাই। তুমিই তো সেই বাটারফ্লাই, না? বাগানে একদিন তুমি আসবে, আশা বান্ধি মনে মনে। অর্থাৎ মনে মনে লিখি ড্রিমলিপি। জার্নি অব কাঁটা কি কোনো ড্রিমলিপি? কাঁটা কি বাস্তব, না ড্রিম? শহীদুল জহিরকে প্রশ্ন করা যেতে পারত। কিন্তু ২০০৮ সালে তাঁর কবর হয়েছে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। কিন্তু গল্প থেকে সিনেমা হয়ে যাওয়ার পর তো আর শহীদুল জহিরকে প্রশ্ন করার কারণ থাকে না। এবং সব প্রশ্নের নিহিত তীরে তখন উপবিষ্ট থাকি আমি। আমাকে প্রশ্ন করা যেতে পারে। যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আমাকেই। ছবি হিসেবে আমাদের নবীন টিমের পেরে ওঠা ও যেটুকু না পারা—সব দায়িত্বই নির্মাতার। ওকে। কাঁটা দেখার পর যত প্রশ্নমালা, আমি সেই প্রশ্নমালার মুখোমুখি হতে স্বতঃস্ফূর্ত প্রস্তুত।


p .17, 2

কাঁটা ক্যাম্প নারিন্দায়, মিটিংয়ে ধ্রুব এষ, মাহমুদুর রহমান দীপনসহ অন্যরা


যেহেতু এ ছবির গল্প-বিস্তৃতি বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকার সবচেয়ে পুরোনো অংশের একটি মহল্লা, ভূতের গলি এবং মহল্লার প্রায় পাঁচশো মানুষ ছবির চরিত্র, তারা কেউ তারকাও নয়। তারা অভিনেতা-অভিনেত্রীও নয়, তাদের আইডেন্টিটি, তারা ভূতের গলিতে বসবাস করে। ছবির শুটিং শুরু হয়ে যাবে শিগগিরই—এমন একটা অবস্থায় এসে পৌঁছেছে এই লেখা, জার্নি অব কাঁটা; তাই মহল্লাবাসীদের সঙ্গে আপনাদের একটু-আধটু পরিচয় থাকলেই তো ভালো। সেই লক্ষ্যেই তাদের ছবি ও কথাবার্তা ছাপা হয়ে চলেছে ‘শ্রী’-র ওয়েব পৃষ্ঠায়। এবং যেহেতু কাঁটা বাজার ইন্ডাস্ট্রির বাহির-প্রান্তিকেই নির্মিত একটি ছবি, তাই ছবির নানারকম নেপথ্য বাস্তবতা জানিয়ে দিচ্ছি আপনাদের। জানা থাক আপনাদের, কাঁটা কীভাবে নির্মিত হলো! আমরা দেখতে পাব, মহল্লার মোড়ের চৌরাস্তার ধারে যে নাপিত ঘর—ইয়োর চয়েস সেলুন, সেই সেলুনঘরের সামনে পেতে রাখা দুইটা কাঠের বেঞ্চই হচ্ছে এই ছবির স্টোরি স্টেশন। কতিপয় মহল্লাবাসী যেমন বসে বসে গল্প করে, গল্প করতে করতে তাদের গল্পের হাই ওঠে একদিন, বাঁশিওলা লাবু মিয়া তখন বাঁশি বাজাতে বাজাতে চলে যায় প্রাচীন শহরের প্রাচীন গলি দিয়ে। মহল্লার মানুষের সঙ্গে কি তাঁর কোনো কথা হয়? কথা কি মুখ দিয়েই হয় না বাঁশি দিয়েও হয়? লাবু মিয়ার সব কথা বাঁশির ফুঁতেই প্রকাশিত হয়। ব্যক্তিগতভাবে লাবু ভাই আমার খুব কাছের মানুষ, মনের মানুষ, দীর্ঘ বছর চারুকলার সামনে তাঁকে কে না দেখেছে? আমি তো চারুকলারই ছাত্র ছিলাম। কাঁটাতে লাবু ভাই আছেন, আছে তাঁর বাঁশি—জয় বলেছেন, ‘কবির হাড়, ফুঁ দিলেই তো বাঁশি।’

অ্যালান পো চরিত্র করছিল বাবু গজেন্দ্রগমন। কেরানীগঞ্জে জেলে তার জন্য কয়েক প্যাকেট সিগারেট, কিছু টাকা পাঠানো হলো কাঁটা ক্যাম্প নারিন্দা থেকে। শুভকে পাঠালাম। দিয়ে এলো। এসে বলল, ‘ভজেন’দা জেলে যাওয়ার পর চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। বলল, টোকন রে কইয়ো আমি জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর শুটিং-টুটিংয়ে আর ফিরে যাইতে পারব না।’

‘কেন?’ শুভ এসব কী শোনাচ্ছে? শুভ গজেন’দাকে কেন যে ভজেন’দা বলে ডাকে, তা আমরা জানি না। গজেন’দা শুটিং করবে না কেন? তার তো কন্টিনিউটি শট বাকি আছে।


p 17. 4

কাঁটা ক্যাম্পের প্রপস রুম


‘কারণ বলল জেলের লোকেরা আমারে চিনে ফেলাইছে। কয়েকজন কয়েদি সালাম করেছে পা ধরে। আমি তো আর আগের গজেন নেই, এই কতাডা টোকনরে বুঝাইয়ে কইয়ো।’ এবং সত্যি, দুই দিন তার শুটিং হয়ে যাওয়ার পর সে নারিন্দা ক্যাম্প থেকে শাহবাগ-সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে, তামাক খেতে গিয়ে ধরা খায় ম্যাজিস্ট্রেটের মোবাইল কোর্টে। তাই ১ মাস পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে গজেন’দা আর নারিন্দা ক্যাম্পে ফিরে আসেনি। এমন কি তার শটের কন্টিনিউটি দেওয়ার জন্যও সে আসেনি, তাকে ধরেও আনা যায়নি। একদিন, তখন গজেন’দা জেল মুক্তির পর আবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফিরে গেছে, সেই খবর পেয়ে তাকে ধরে আনতে দুইজন সহকারীকে উদ্যানে পাঠালাম। রমনা কালী মন্দিরের ওখানে গজেনকে ওরা পেয়েছে কিন্তু কোনোভাবেই সে আর শুটিং করবে না। আমি সহকারীদের বললাম, ‘যেকোনো ভাবেই ধরে আনো। তার তো দুইটা শট এখনো বাকি, কন্টিনিউটির ব্যাপার!’ কিন্তু গজেন তো আর আসবে না। সে নাকি অন্য এক পর্যায়ে চলে গেছে জেলে থাকার সময়। জীবন দর্শনের বদল ঘটেছে জেলের ভেতরে। কিন্তু সহকারী দুজন জানাল, ‘গজেন আসতে চায় না।’ বললাম, ‘আনতেই হবে। দড়ি দিয়ে বান্ধো, তারপর রিকশায় তোলো।’ সহকারীরা তাই করতে গেলে গজেন মাটিতে শুয়ে পড়ে চিৎকার শুরু করে দেয়, সেই বাস্তবতায় উদ্যানের টহল পুলিশ ঢুকে পড়ে ঘটনার সন্ধ্যায়। কাঁটার সহকারীরা ফোনে আমাকে ধরিয়ে দেয় পুলিশকে। পুলিশ ফোনেই আমাকে জানায়, ‘আপনার লোকেরা উনারে যে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, কোথায় নিয়ে যাবে?’

‘কেন?’ শুভ এসব কী শোনাচ্ছে? শুভ গজেন’দাকে কেন যে ভজেন’দা বলে ডাকে, তা আমরা জানি না। গজেন’দা শুটিং করবে না কেন? তার তো কন্টিনিউটি শট বাকি আছে।

‘কারণ বলল জেলের লোকেরা আমারে চিনে ফেলাইছে। কয়েকজন কয়েদি সালাম করেছে পা ধরে। আমি তো আর আগের গজেন নেই, এই কতাডা টোকনরে বুঝাইয়ে কইয়ো।’

আমি বললাম, ‘নারিন্দায়।’

‘কিন্তু উনি তো যাবেন না। মাটিতে শুয়ে চিৎকার করতেছে। বলতেছে আমারে ধরে নিয়ে গেল, আমারে বাঁচান’।

আমি পুলিশিকে বোঝানোর চেষ্টা করি যে, উনার কন্টিনিউটির শট বাকি আছে। উনি আমাদের ছবির অভিনেতা।’
পুলিশ বলল, ‘অভিনেতা তো বুঝলাম, কাগজপত্র আছে?’

‘কিসের কাগজপত্র?’

‘উনি যে অভিনয় করতেছে সেই কাগজপত্র আপনার লোকেরদের কাছে তো নেই।’

হ্যাঁ, নেই। আমি কখনোই ভাবিনি, এই গজেন’দার সঙ্গে আমার কাগজপত্র করতে হবে। এই গজেন’দা আমার সহকারী হিসেবে সেই ফরাসগঞ্জে থেকেছে আমার সঙ্গেই। এই গজেন’দাই তো সেই সনৎকুমার শিকদার, একদা ঝিনেদায় আমরা একই সঙ্গে ঘোরাফেরা করেছি। উনি তখন সরকারি কেশবচন্দ্র কলেজে পড়তেন স্নাতকে, আমি ইন্টারে। যাই হোক, আমি পুলিশকে আবার বোঝাতে চেষ্টা করি। কিন্তু কাজ হলো না। পুলিশের একজন আমাকে জানালেন, ‘উনারে যে জোর করে নিয়ে যাবেন, এইটা তো আমরা হতে দিতে পারি না। উনি যে আপনাদের সিনেমায় কাজ করতেছেন সেই কাগজপত্র দেখালে আমরা উনাকে নিয়ে যেতে দেবো।’

না। শ্রীমান গজেন্দ্রগমনকে আমরা আর ফিরে পাইনি নারিন্দায়। তার কন্টিনিউটির শট ছিল একটি গলিতে, আর নদীর ওপারে। কন্টিনিউটির শট মেলাতে কী করেছি আমরা, সে আমরাই জানি। সেই গজেন’দা গতবছর, ২০২২ সালে মাগুরায় গিয়ে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন, একদিন কচি খন্দকার জানালেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘গজেন্দ্রগমন স্মরণ সভা’ করেছে বন্ধু-স্বজন-ভক্তরা। কাঁটার দর্শক গজেন’দাকে ছবিতে দেখতে পাবে। মানুষটির জন্য সবসময় ভালোবাসা আমার থেকেই যাবে। গজেন’দার হাসি, মুখ শুকনো করে বসে থাকা, রেগে যাওয়ার মুহূর্তগুলো আমার মনে আছে। আমরা দুজনে একদা ফরাসগঞ্জের বসন্ত কুমার দাস রোডে অপুদের বাড়িতে থাকার সময় বিহারী লাল জিউ মন্দিরে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে খাবার খেয়েছিলাম। আর্টিস্ট জয়দেব বা আমাদের জয় সে সব জানে। সেট ডিজাইনার রবি দেওয়ান জানে। অপু জানে। ফরাসগঞ্জের জাহাঙ্গীর আলম বাবু ভাই জানেন। বাবু ভাইও কাঁটাতে একটি চরিত্র করেছেন।


p 17. 16

সুবোধের বউ স্বপ্নারানী দাসের হাত


ব্যবসায়ী রেজানুরের পুরো ফ্যামিলি কাঁটার পাত্রপাত্রী হয়েছে। রেজানুর তো বটেই, ওর বউ, দুটি ছেলেমেয়ে এবং বউয়ের পেটে তখন যে আসিতব্য বাচ্চা, সেই বাচ্চাও কি কাঁটাতে ক্যারেক্টার হয়ে গেল না? ওদের কাছে কাঁটার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। বন্ধু বাবুর বউ রুনা কাঁটার অভিনেত্রী। রুনা খুব ভালো অভিনেত্রী। তারেক মাসুদের ভাই বাবু, বাবু আমার বন্ধু। রুনা বাবুর স্ত্রী। ওরা এখন ঢাকা ছেড়ে ভাঙাতে গিয়ে নিজেদের বাড়িতে বসবাস করছে। নরসিংদী ‘বাঁধনহারা’ থিয়েটার থেকে কাঁটার স্ক্রিনে ঢুকেছে একদল ছেলেমেয়ে। ওরা যথেষ্ট পটু অভিনয়ে। মঞ্চে ওদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আগে থেকেই পটু করে রেখেছেন নির্দেশক ও অভিনেতা কামরুজ্জামান তাপু। কাজেই বাঁধনহারা’র কাছে আমাদের ঋণের শেষ নেই। ক্যামেরার পেছনে থাকা নির্মাতা ও মঞ্চের নাট্য নির্দেশক অনেকেই অভিনয় করেছেন কাঁটাতে। কাঁটাতে অভিনয় করেছেন এমন নির্দেশক ডজন খানেকের বেশি। কাস্টিং পিরিয়ডে অত খেয়াল করিনি, এই লেখা লিখতে বসে খেয়াল করে দেখি, অনেকেই। অনেক নির্দেশক। এখানে নাম লিখি যদি তাঁদের, তাঁরা কারা? কায়েস চৌধুরী, মিনহাজুর রহমান, গাজী রফিক, জুনায়েদ হালিম, অনিমেষ আইচ, শিবু কুমার শীল, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, শিখা কর্মকার, অন্তু আজাদ, রেজা ঘটক, সন্দিপ বিশ্বাস, ফাহিম মালেক ইভান, শিখা কর্মকার—কীভাবে কীভাবে যেন চৌদ্দ-পনেরো জন নির্মাতা-নির্দেশক কাঁটাতে অভিনয়ে যুক্ত হয়ে গেলেন, এ তো দারুণ একটা ব্যাপার। এত নির্দেশক কি এদেশের আর কোনো ছবিতে একসঙ্গে অভিনয়ে যুক্ত হয়েছেন? জানি না। দুজন ডাক্তার কাঁটার অভিনেতা। একজন লেখক কাম ডাক্তার আনোয়ারা সৈয়দ হক ও অপরজন ডাক্তার আরিফ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক রিফাত আলম মিশু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভায়ের শিক্ষক ইভান কাঁটার অভিনেতা। পাবনা থেকে এসে একটি বড়ো চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন মওলানা মোসলেমউদ্দিন। মোসলেম ভাই একজন মওলানা এবং তিনি তারেক মাসুদের ছবি ‘মাটির ময়না’ ও ‘রানওয়ে’তে অভিনয় করেছেন। সত্তরের কাছাকাছি বয়েসের মওলানা মোসলেম ভাইয়ের তৃতীয় ছবি ‘কাঁটা।’ সমাজের নানানশ্রেণি পেশার মানুষ এ ছবিতে কাজ করেছেন। পুরান ঢাকার একটি মাদ্রাসার প্রায় পঁচিশজন ছাত্র অভিনয় করেছে কাঁটা ছবিতে—এ এক দারুণ ঘটনা। জীবনে হয়তো কাঁটা তাদের প্রথম ছবি। এরপর কি মাদ্রাসার সেই ছাত্রেরা আর কখনো অভিনয় করবে? সে আমি জানি না। তবে সবাই খুব কষ্ট করেছে কাজটা করতে গিয়ে। লম্বা দৌড়ে যাওয়া শট যদি পাঁচবার এনজি হয়, তাইলে কী হয়? ওই লম্বা দূরত্বের পথটুকু এতবার দৌড়াতে দৌড়াতে তারা ক্লান্ত হয়ে যায়। কিন্তু আমার তো ক্লান্তি দেখার টাইম নেই। তাই, ‘যাও, আবার যাও। ওই গলির মাথা থেকে দৌড়ে আজিজ ব্যাপারীর বাড়ির উঠোনে প্রবেশ করে একেবারে সোজা সিঁড়ি বরাবর দৌড়—স্লোগান দিতে দিতে দোতলার ছাদে উঠে যেতে হবে।’ কী সাংঘাতিক! এই দৌড়ে সেদিন অভিনেতা বিপ্লব সরকার কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। বিপ্লব সরকার হচ্ছে কনক আদিত্যের বন্ধু, আমার ‘রাজপুত্তুর’ বিস্ময় সরকার মুগ্ধর বাবা। মুগ্ধ অংকিতার ভাই। অংকিতা ওর বোন। মমতা তালুকদার ওর মা। পুরো ফ্যামিলি গানবাজনা করে।


p. 17. 3

বাঁশিঅলা লাবু মিয়া ও অভিনেত্রী শিখা কর্মকার


ফরাসগঞ্জ থেকে গজেন’দা চলে যাওয়ার পর আমার রান্নাবান্নার কাজে নিযুক্ত হয়েছিল সেলিম। নারায়ণগঞ্জের সেলিম। সেলিম ওর ছোটো ভাই সহ ৪ জন কর্মি নিয়ে এলো কাঁটা টিমে। ওরা প্রোডাকশনে কাজ করতে চায়। করছিলও। চলছিল ভালোই কিন্তু চলল না। বাকি টিমের কারো কারো সঙ্গে সেলিমদের দ্বন্দ্ব হয়ে গেল। সেলিমদের কাঁটা টিম থেকে চলে যেতে হলো। কত কী হয় একটি প্রোডাকশনে। এই সেই সেলিম, যে কিনা একদিন রাঙামাটিতে শুটিংয়ে গিয়ে চাকমা ছেলেদের হাতে মার খাওয়ার রাতে দৌড়েছিল আমার সঙ্গে। কিন্তু কাঁটা টিমের অন্যদের সঙ্গে মারাত্মক দ্বন্দ্ব হয়ে যাওয়াই ওদের সঙ্গে জার্নি আর এগোলো না। এগোলে ভালো হতো। হয়নি। কত কিছু হয়, কত কিছু হয় না। এই হওয়া আর না হওয়ার মধ্যে একটি জীবনের গপ্পো লিখি আমরা। গপ্পো না দিনলিপি? দিনলিপি না ড্রিমলিপি? ঝিমলিপি নয় তো? ঝিমলিপি আবার কি রে ভাই? ঝিমোতে ঝিমোতে যে লিপি চিত্রিত হয়, তাই কি ঝিমলিপি? জানি না। সব জানা আমি জানব কী করে? সব জানে এমন মানুষ কোথায় থাকে? সেই মানুষের কাছে যেতে চাই। গিয়ে বলব, ‘বলেন তো, আগামীতে কাঁটা বা আমার কপালে কি কি ঘটবে, বলেন তো!’

এই হওয়া আর না হওয়ার মধ্যে একটি জীবনের গপ্পো লিখি আমরা। গপ্পো না দিনলিপি? দিনলিপি না ড্রিমলিপি? ঝিমলিপি নয় তো? ঝিমলিপি আবার কি রে ভাই? ঝিমোতে ঝিমোতে যে লিপি চিত্রিত হয়, তাই কি ঝিমলিপি?

কাঁটাতে অভিনয় করেছেন আলোকচিত্রী দেবু দা—দেবাশীষ গুপ্ত। দেবু দা কাঁটার স্ক্রিপ্ট কম্পোজ থেকেই দেখছেন আমাকে, যখন আমি থাকতাম নিউ এলিফ্যান্ট রোডের বাসায়। ইনফ্যাক্ট, এই মুহূর্তে, যখন আমি লিখছি কাঁটা জার্নি, দেবু’দার বাসা আর আমার বাসা আবার পাশাপাশি, নিউ এলিফ্যান্ট রোডেই।


p 17. 8

২৭ মার্চ ১৯৭১, কারফিউ শিথিল করায় কুলসুমরা ভূতের গলি ছেড়ে যাচ্ছে


কাঁটা সেটে আমরা নয় মাস ছিলাম। এর মধ্যে প্রথম আড়াই মাস ছিল সেট নির্মাণ-পুনর্নির্মাণ সংক্রান্তকাল। এর মধ্যে শুট ডেট ৬১ দিন। বাকি দিনগুলো আমরা সেটেই থেকেছি। নারিন্দা ক্যাম্পে গেস্ট এসেছেন কেউ কেউ। যেমন দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী চলচ্চিত্রপ্রেমী জনাব গোলাম মোস্তফা, তিনি নির্মাতা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের বন্ধু। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের পোস্টারের ওপরে দুই খণ্ডের ভল্যুম বই বেরিয়েছে, সেই বইয়ের সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। এই দুই খণ্ডের বই আমাদের অনেক কাজে লেগেছে। সাংবাদিক তরুণ সরকার, সাংবাদিক আমাদের চারুকলার তপু, অধ্যাপক কামালউদ্দিন কবির, কবি আসাদ মান্নান, কবি কাম ডাক্তার হারিসুল হক, অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট প্রকাশ বিশ্বাস, নির্দেশক রেজা আরিফ, অভিনেতা-নির্দেশক আমিনুর রহমান মুকুল, অভিনেতা জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা আরমান পারভেজ মুরাদ, রম্য লেখক আহসান কবির, সম্পাদক ও নির্মাতা রতন পাল, ভিডিও সম্পাদক বন্ধু ইকবাল কবির জুয়েল, অভিনেতা তারিক আনাম খান, অভিনেতা-নির্দেশক তৌকীর আহমেদ, অভিনেত্রী অপি করিম, নির্দেশক জাহিদুর রহিম অঞ্জন, নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ, সেট নির্মাতা রবি দেওয়ান, মিউজিশিয়ান তমাল, ফটোগ্রাফার প্রভা নূরজাহান, শিল্পী আনিসুজ্জামান সোহেল, সব্যসাচী হাজরা, মাশুক হেলাল, প্রশান্ত অধিকারী, মহাকাশ মিলন, সাংবাদিক হাসান মামুন, রাসেল মাহমুদ, সাংবাদিক অদ্বয় দত্ত, তরুণ নির্মাতা খোন্দকার মো. জাকির, শিল্পী বাপ্পা সৌরভ, সিনেমাটোগ্রাফার মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান, নির্দেশক গাজী রাকায়েত, শিল্পী শেখ সাহেদ এসেছেন কাঁটা ক্যাম্পে। নারিন্দাতেই বাসা সাংবাদিক দীপ নিঝুমের। একদা একসঙ্গে আমরা কলিগও ছিলাম আমাদের সময় পত্রিকায়। নারিন্দায় মাঝেমধ্যে দীপ নিঝুম ক্যাম্পে এসে আমাদের খবর নিয়ে যেত। নিঝুমদের ক্লাবে ২০১৮ বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখেছি। সবাইকেই কাঁটা টিম থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কাঁটা জার্নিতে তারাও জার্নিম্যান।

২০১১ সালে আমি কারওয়ানবাজারে একটি পত্রিকায় কাজ করতাম। অফিসের নিচে নেমে রনির দোকানে চা খেতাম। চায়েরই দোকান কিন্তু দোকানের একটা বিরাট অংশ জুড়ে শোকেসে সাজানো ছিল বিভিন্ন অ্যান্টিক জিনিসপত্র। রনি বলত, চায়ের দোকান বেশি দিন রাখবে না ও, পুরোনো জিনিসপত্র দিয়ে রেয়ার কালেকশন অ্যান্টিকের দোকান করবে। ‘রনি কালেকশনস’ নামে একটা দোকান করেছেও, কিন্তু সেটি ঢাকা শহরের বাইরে। আটিবাজার। আমার কাঁটা পিরিয়ডের ২০১৮ সালে হঠাৎ রনির কথা মনে পড়ল। আমি যেমন ওকে খুব পছন্দ করতাম, ওও আমাকে পছন্দ করত। সেই ২০১১ সালে দেখেছি, রনির দোকানে একটা পোর্টফোলিও। পোর্টফোলিও মানে একটা বিরাট ঢাউস খাতায় বিভিন্ন পত্রিকার কাটিং কিছু খবরাখবর আছে। এর মধ্যে আমাকে নিয়ে লেখা পত্রিকার নানান ক্লিপও দেখলাম। সেই থেকেই রনির সঙ্গে আমার খাতির। নারিন্দা থেকে বসিলার ওপারে একজন সহকারী পাঠালাম। অনেক বছর পরে ফের যোগাযোগ হলো আমাদের। সিনেমার কথা বললাম। পিরিওডিক্যাল ছবির জন্য ব্যাবহারিক অনেক জিনিসপত্র রনি কালেকশনস থেকে আনা হলো। রনির কাছে, ওর ‘রনি কালেকশনস’ প্রতিষ্ঠানের কাছে কাঁটার কৃতজ্ঞতা রয়ে গেছে।


p 17. 10

রাস্তায় চলছে ইস্ট পাকিস্তান রোডস ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের বাস


এত দিনে গোছগাছ সম্পন্ন। প্রি-প্রোডাকশন যথেষ্ট হয়েছে। এবার শুটিং শুরু হচ্ছে কাঁটার। পাঁচশো চরিত্রের ছবি কাঁটা। তিনটা সময়ের তিনটা আলাদা গল্প নিয়ে রচিত কাঁটা। গল্পের বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে ১৯৮৯-৯০ সাল। সেখান থেকে দুটি ফ্ল্যাশব্যাক আছে, একটি ফ্ল্যাশব্যাক আমাদের নিয়ে যাবে ১৯৭১ সালে, আরেকটি ফ্ল্যাশব্যাকে আমরা যাব ১৯৬৪ সালে। আর আমরা শুটিং শুরু করছি ২০১৮ সালে। ছবি দেখবে দর্শক এ বছরেই। এ বছর বলতে ২০২৩ সাল। এরই মধ্যে ছবির প্রধানতম দুই চরিত্র করোনাকালে মারা গেছেন। কায়েস চৌধুরী ও এস এম মহসীন। এছাড়া গজেন’দা, পান্না—তারা দুটি ছোটো চরিত্র করেছে। এখন প্রয়াত এই দুজনে। একজন সহকারী টুটুল মোটর সাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা গেছে। শুটিং পিরিয়ডে আমার মেজোমামা মারা গেছেন ঝিনাইদহে, আমি কাঁটা সেট ফেলে রেখে যেতে পারিনি। কষ্ট জমেছে বুকে। কষ্ট লুকিয়ে রেখেছি। কষ্টকে লুকোতেই হবে, কষ্টকে গুম করে দিতে হবে। গুম-সংস্কৃতি কতভাবেই না একজিস্ট করে আমাদের ভেতরে!

কাঁটা কতজনের সহযোগিতা ও পরিশ্রমে গড়ে উঠছে, সবার নাম যাবে ছবির টাইটেলে। যতদূর সম্ভব সবার নামই যাবে। কেন না, কাঁটা সবারই ছবি। একটি পুরো টিমের ছবি। টিমে যে যার অবস্থানে দায়িত্ব পালন করেছে। একটি নবীন ও অনভিজ্ঞ টিমকে শিখিয়ে-পড়িয়ে নিয়ে করা আমার কাজ কাঁটা। যে যার পজিশনে কাজ করে গেছে দিনরাত একাকার করে, জীবনের আর সব কিছু বাদ দিয়ে! সম্মিলিতভাবে কাজ করতে গেলে যুক্ত হওয়া কেউ কেউ তুমুল কাজ করে, কেউ কেউ দায়িত্ব পালন করে, কেউ কেউ কিছুটা ফাঁকিবাজিও করে। সবার কথাই তো লিখতে হবে। তবে সবার সব কথা বা ঘটনা কি আমার সব মনে আছে পরিষ্কার করে, চারপাঁচ বছর পর? ভুলে কি যাইনি কিছুই? মেমোরি চিপস রিসিভ করে যেমন, ইরেজও তো করে! সবারই যদি করে, আমার করতে পারে না? অবশ্য কিছু বিষয় ভুলে যাওয়ারও স্কোপ থাকে না। প্রতিদিনের পরিক্রমায় কিছু বিষয় রচিত হয় যা পরবর্তী জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়তে পারে। এভাবেই হয়তো আমরা এগিয়ে যাই। এগিয়ে কোথায় যাই? ভবিষ্যতের দিকে যাই, ভবিষ্যৎ কোথায় থাকে? ভবিষ্যতের বাড়ি কোথায়?


p 17. 5

ক্যাম্পে মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে ঘোরাঘুরি নিষেধ ছিল বলেই ফোনেরা ঝিম পাড়ছে


অতীতের স্মৃতির ভাঁড়ার কোথায়? আর বর্তমানের অস্তিত্বই বা কোথায়? যাপিত বর্তমান কি আমরা পুরোপুরি দেখতে পাই, নাকি কিছুটা দূরে যাওয়ার পর আমরা দেখি বর্তমানকে, যে বর্তমান তত দিনে অতীতের গোলাঘরে আশ্রিত! আমাদের ছবির চিত্রনাট্যেও একটা টাইম থিয়োরি ক্রিয়াশীল—অতীত, বর্তমানের ভেতর দিয়ে ভবিষ্যতে প্রবিষ্ট হয়, কাঁটা ছবিতে ভবিষ্যৎ, বর্তমানের ভেতর দিয়ে অতীতে অনুপ্রবিষ্ট হবে। এ এক কঠিনতর ব্যাপার। কিন্তু আমি বা আমরা তো ‘কঠিনেরে ভালবাসিয়াছি।’ কঠিনকে কতখানি নির্মাণে আনা গেল, কাঁটা দেখে দর্শক বিচার করবে তার। দশ জন দর্শক একই লেন্থে বাস করে না, দশ জায়গায় করে। যে যার অভিজ্ঞানে থাকে। এও সত্য, কোনো পাখি যদি ভালোবাসার ভেতর দিয়ে কাঁটাকে বুকে গেঁথে নিয়ে থাকে, সেই পংখিনীর কথা আমি কীভাবে লিখব? কাঁটা ও আমার সঙ্গে পংখিনীর বোঝাপড়া, আমাদের জীবনচক্রে জড়িয়ে পরস্পর একাকার হয়ে যাওয়া নিয়ে তো কিছুই লিখিনি এত দিন, কোনো পর্বেই। কেন, কেন লিখছি না তবে? কখনো কখনো কিছু ‘কেনকে’ কেন যেন অপ্রতিরোধ্য মনে হয়। কারণ তো থাকেই, কেন না, জগতে কারণ ছাড়া কিছুই ঘটে না। পাখি যদি ডানা মেলে দেয়, পাখি যদি উড়ে যায় পৃথিবীর অন্যান্য আকাশে, আমি তো সেই আকাশের কথা লিখতে পারি না। আমি পাখির ডানার উড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পারি। বড়োজোর উড়ে যাওয়া ডানার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি। তাকিয়ে থাকতে থাকতে দেখতে পারি, ডানা ক্রমশ নীল শূন্যতায় মিশে যাচ্ছে। ডানা ও আকাশ একাকার হয়ে যাচ্ছে। আমার চোখ অতদূরে পৌঁছচ্ছে না কিছুতেই। আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না আর। তখন দক্ষিণের হাওয়া এসে যদি হঠাৎ প্রশ্ন করে, ‘কে সে? সেই পংখিনী কি বালিকা না প্রবালিকা’— না লিখলে পাঠক তা জানবেই বা কীভাবে? কাঁটা ছবি যেমন আপামর দর্শকের জন্য, জার্নি অব কাঁটা তো পাঠকের জন্যই। পাঠকের কাছে আমার অভিজ্ঞান, অভিপ্রায় আমি নিবেদন করব না? পাঠক ও দর্শকের ব্যবধান একদিন কি কমে আসবে এই বাংলায়! আসবে, অপেক্ষায় থাকি।


p 17. 14

অ্যালান পো বিড়াল ধরে বস্তায় ভরে নিয়ে যাচ্ছে আজিজ ব্যাপারীর ইশারায়…


বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা-মাধুরী, সৌন্দর্যের অনাবিল মাধুর্য আমি লিপিবদ্ধ করব জার্নি অব কাঁটায়। লিপিবদ্ধ করব দিনরাত। তাইলেই তো দিনলিপি হবে, তাই না? আবার দিনলিপি? দিনলিপি না ড্রিমলিপি? পাঠক সখা-সখি হে, উত্তরোত্তর আরও মুখোমুখি হবো আপনাদের। আমাকে তো কনফেস করতেই হবে এই বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ ও বাংলা ভাষার কাছে। নইলে বৃষ্টির মধ্যে ভেজার ইচ্ছে আমার টিকে থাকবে নাকি? চরাচরের জোছনায় পুড়ে যেতে উৎসাহ পাব কোথায়? জীবন এমন, ভিজতেও চাই, পুড়তেও চাই, ভালোবাসায়। ভালোবাসারই বা বাড়ি কোথায়? ভালোবাসা কোথায় থাকে? করোনাকালের পর সে কি জেগে আছে, না ঘুমিয়ে পড়েছে? কী চাই আমি ভালোবাসার কাছে? এ কথার শানে নুযুল কি—পুড়তেও চাই, ভিজতেও চাই!

চাই চাই চাই। ‘ভীষণ অসম্ভবে আমি তোমাকে চাই’ গাচ্ছে আর্লি নাইনটিজের হাওয়া, গাচ্ছেন কবীর সুমন। পাঠক, শুনতে পাচ্ছেন আপনি? তুমি শুনতে পাচ্ছ তো, ওফেলিয়া?


আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ১ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ২য় পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৩য় পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৪র্থ পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৫ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৬ষ্ঠ পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৭ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৮ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৯ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ১০ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা পর্ব ১১
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা পর্ব ১২
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা পর্ব ১৩
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা পর্ব ১৪
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা পর্ব ১৫
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা পর্ব ১৬


কাঁটা প্রোডাকশন ফটোগ্রাফি : হোসেইন আতাহার

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

জন্ম ১ ডিসেম্বর, ১৯৭২, ঝিনাইদহ। বেড়ে ওঠা, বসবাস:  ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোর, খুলনা ও ঢাকা। একাডেমিক (সর্বশেষ) পড়ালেখা: চারুকলা ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। গ্রন্থ প্রকাশনা: কবিতার বই কয়েকটি, গদ্যের বই কয়েকটি। সম্পাদিত গ্রন্থ: ২টি। ছবি নির্মাণ: ‘ব্ল্যাকআউট’ (২০০৬) আনরিলিজড। ‘রাজপুত্তুর’ (২০১৪), ‘কাঁটা’ (২০২৩) । পেশা: আর্ট-কালচার চষে বেড়ানো।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।