রবিবার, মে ৫

কারাগার ও অন্যান্য কবিতা : ফরহাদ নাইয়া

0

কারাগার


দুই লাইন লিখতে গিয়া তিন লাইন পিছাইয়া যাই। তোমার দিকে আগাইতে থাকলে মনে হয় পিছাইয়া যাইতেছি। এইভাবে আগাইতে আগাইতে তোমার ঠোঁটে চুমু খাইতে গিয়া মনে হয় আমি কখনো জন্মাই নাই। এই স্পর্শ আমরা করেছিলাম দাপর যুগে কিংবা হাম্বুরাবির কড়া শাসনের ভেতর। তোমার হাত ধরে অনু়ভব করি আমি ছিলাম ম্যামথ অথবা বাইসন, এত পিছিয়ে গেছি। তোমার থেকে চলে গেছি অগণ্য দূরে কিন্তু তোমার চোখ এতই স্বচ্ছ আর নিকটবর্তী আমি সেখানে তাকিয়ে আমার কবর ছাড়া কিছুই দেখতে পাই না।


জ্বরের মৌসুমে


জ্বর আসে তুমি আসো না। যারা আসে সকলে নাপা এক্সট্রা কিন্তু আমার তো লাগবে তোমারে, সাপোজিটর। কিছুটা পিছলা হয়ে ঢুকে যাবা। যেহেতু প্রেমিকা তুমি, বাপের সামনে ঢোকানো যাবে না। সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে তোমাকে ঢোকাতে হবে পেছনের দরজা দিয়ে।


পেট্রোল


ভেতরে এতো আগুন তবু বন্ধু আমাদের পরিচয় তরল হয়ে গেছে। জীবন যাপন রয়ে গেছে ঘোলা। চলো আমরা পাথর হয়ে যাই। অন্তরের আগুন বের করে আমরা পরস্পরের ছাই হয়ে থাকি। তুমি আমাকে ওড়াও, আমি তোমাকে।


হৃদমাতা-৬০


এতই ক্ষুদ্র আমি
মাঝে মাঝে মনে হয়
একটা পিঁপড়াই আমাকে খেয়ে ফেলবে
কাক দেখলে ভয় পাই
নিজেরে মনে হয় এক টুকরা মাংশ
বাদামের মতো ফিল করি নিজেকে
ভয় লাগে শালিকের কাছে যাইতে
যদি হইতাম খুচরা পয়সা…
কিন্তু তুমি তো শাড়ি পড় না
আঁচলে বাইন্ধা রাখবা কীভাবে?
তোমারে কেমনে পামু
পথের ধুলা হইয়াও দেখছি
তুমি গাড়ি করে যাও
জানলার কাচ দিয়ে দেখো ধুলা উড়তেছে।
আমি হয়তো বাতাস হইতে পারতাম
আমারে এড়াইতে
তুমি কি মরে যাইতা?


হৃদমাতা ৬১


সকালে তোমারে মনে পড়ে
আমি গলা কাটা মুরগির মতো ছটফট করে মরে যাই
তোমারে মনে পড়ে দুপুরে
আমার কলিজা রোদে পুড়ে যায়
তোমারে মনে পড়ে বিকালে
আমার রক্ত ঠান্ডা হয়ে আসে
তোমারে মনে পড়ে রাতে
আমি হাঁপানি রোগীর মতো শ্বাস করতে পারি না।

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

নিজের পরিচয় তিনি দেন এভাবে— ফাল্গুনের ৩ তারিখ জন্মাইছি। বাড়ি- নদীর পাড়। বাঘা আইড় দম্পতির তিনমাত্র সন্তান। এখন ঢাকায় থাকি, মানুষের বাজারে ঘুরে বেড়াই। যেহেতু মাছ, বুড়িগঙ্গার জলে পরিচয় ঘোলা হয়ে গেছে। মেঘে আর চাঁদের বিন্দুতে জাল ফেলে আমাকে তুলে নিন।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।