মঙ্গলবার, মার্চ ১৯

চিঠি : আসমা অধরা

0

Dear God or whatever else, I’m thankful for my life. thanks for today, yesterday, tomorrow and forever.

ওই যে কণ্ঠ জুড়ে নাড়ির সাত পাক জড়িয়ে ছিল, তীব্র ব্যথায় কাতরেছিল মা। সেখানে অপরাধী হয়ে ঝুঁকে থাকি মাগফেরাতের ফুলের মতন, জিকিরের দেশে, ফোরাতের জলের মতন কলকল করে অন্তরমধ্য আকিকের জপমালা। পার্থিব কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাপ্রবাহে গরল উগড়ে আসে তীব্র বিবমিষার মতো, তদ্ভিন্ন ফের সমাহিত হই সেই নাড়ির ঋণচক্রে, বাদবাকি ঔদার্য কি অপার বিনম্রতায় নত হয়ে থাকে সেই নাম না জানা অদৃশ্য নীহারে; জানে ললাটমধ্য সিজদাক্ষত, জানে চিবুকের ভাঁজ আর সে সমস্ত আঁধিয়ার—দিনমান যে আটকে থাকে কণ্ঠার হাড়ে।

 

You tend to keep a lot to yourself because it’s difficult to find people who understand.

বলে বলে হয়রান হয়ে যাওয়া পাখি, সমুৎসুক কণ্ঠে কিন্নরে বাজে। আগ্রহবারতা, প্রতিধ্বনিত হয় ওই এক স্নানাধারের দেয়াল জুড়ে। নিবিড় ব্যথায় ছায়াচ্ছন্ন হয়ে থাকা কেবল; আহা, বক্ষোদীর্ণ হুতাশ ও শ্বাসের সুর! আহা, বাষ্প ও বর্ষা ব্যাকুল কথামালা, রুয়ে দাও দিক থেকে দিকে; ঘনঅরণ্য হতে শঙ্কুল বনাঞ্চলে কিঞ্চিৎ আনন্দময়ী বার্তা—সুখাতুর চাঞ্চল্যের নিঃশঙ্ক রেনেসাঁ। উদ্‌গম হোক সুরপুরীর প্রবেশপথে বোধিবৃক্ষের বীজ!

 

I wish I could just favorite or like people’s texts so I didn’t have to reply to them.

ছুটে আসে অগণিত শরদৃষ্টি, বিষাক্ত প্রশ্নবাণ, লোভী লালার আহবান, প্রেমাসক্ত ইশারার লহর, প্রেতকায়া যক্ষকূলের ‘কু’ ও ‘কৃষ্ণ’ মন্ত্রণা। ইথার ও পাথারে, সবাক বা ডাকঘরে ঝুলে থাকা প্রাপ্তিস্বীকারের ফর্দের দিকে তাকিয়ে কী ভাবা যায়! ওই যে চেতনার গলা চিপে ধরা আমন্ত্রণের দিকে তাকিয়ে থেকে থেকে কথা কয়ে ওঠে সোনাবরণ তক্ষক, প্রহরের মাত্রাসমূহ বিদ্রোহে ব্যাকুল হয়, ছেপে যায় নিরুপদ্রবে নির্ধারিত আয়ুষ্কাল যাপনের নয় হাজার নয়শত নিরানব্বই নম্বর আর্জিনামা, নশ্বর ও অন্ধ মানবতার আদালতে।

 

I may be a terrible person but at least I say please and thank you and use my blinker.

নিশ্চুপ থেকে থেকে পুড়ে যায় ক্রোধ ও জ্বরঘ্ন কাঁথার সেলাইসমূহ। ভাঁজে ভাঁজে বিচ্ছিন্ন পরিচ্ছদেরা বলে সমস্বরে এইখানে, ঠিক এইখানে ওই সমস্ত অশালীন ইঙ্গিতের প্রতিটি ঠিকানায় নিক্ষিপ্ত হোক পরমানু ক্ষেপণাস্ত্র ও মৃত জীবাণুর এটম। তারপর নিজেকে মানুষ ভাবার প্রথমার্ধে নিজের প্রতিবিম্ব ছুঁয়ে করা শপথ ও রিপুবিনাশী চৈতন্যের দৈব আলো গ্রাস করে নিয়ে যায় অন্তরমধ্য বিপ্লবের ডামাডোল। দেবাধিরাজ তার পায়ে ঘুঙুর বেঁধে ঝড় তোলেন মস্তিষ্কের প্রতিটি নিউরনে। বুঁজে থাকি চোখ ও দৃষ্টি। ঢেকে রাখা পল্লব ভিজে আসে আর বুকের ভেতর থেকে উঠে আসা মৃদু অথচ তীব্র ঝনাৎ-সম্বলিত আশ্চর্য হাসি যাকে বিশ্লেষণ করলে প্রকট হয় দুঃখিত হবার প্রতিটি আবেদন। এক হাতের তেলো দিয়ে ঢেকে থাকি অক্ষত ডান চোখ, সেখানে দৃশ্যের পর্দা সরিয়ে উঁকি দেয় ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো। শিখিয়ে যায় দৃষ্টি ও দৃশ্যের মাঝে কীভাবে টেনে দিতে হয় টিনটেড পর্দা, নিদেনপক্ষে সস্তায় কিনতে পাওয়া কাঠের চশমা পরিধানের গুপ্ত কৌশল।

 

I hate the feeling of being out of place. It’s like you are nothing and not existing.

সরে যেতে থাকে লোকালয়, দু’হাতে ঠেলে দিই প্রিয় রাজপথের ছায়া ও হাতছানি দেওয়া ফুটপাথ, গড়াতে থাকা বাদামের খোসাও যেন শ্লেষাতুর দৃষ্টি ছুড়ে দেয়। ওইখানে, ফুলার ও পান্থের মন্থর বাঁক, লাল ইটের গাঁথুনি, রেইনট্রি বা জারুলের অবশ করে দেওয়া মুগ্ধ রঙেরা সপ্রশ্ন ও মোহিনী বার্তা পাঠায়, কড়ই ফুলের সুতীব্র নেশাগ্রস্ত সুবাস পাঠায় কার্জনের রাস্তার ছাইরঙা খাম। অথচ ওই সমস্ত চেনা-অচেনা বক্র ও গরলের ‘দৃষ্টি ও প্রশ্ন’ অথবা ‘সবাক ও নির্বাক’ মোড়কে আচ্ছাদিত ‘অ’প্রত্যয় সংযুক্ত শ্লীল সমাজ দুঃস্বপ্নের যক্ষের মতন ভয় দেখায়। ক্রমশ দূর হয়ে যায় বহেরা তলার বাঁশের বেঞ্চি, হলুদ কৃষ্ণচূড়ার ভারে ঝুঁকেপড়া মোলায়েম ছায়ার পথ, শহরের মাঝে নির্জন বনভূমির অহংকারের আবেশে ফেটে পড়া রাস্তা যার বুক ভরা কেবল গড়িয়ে যাওয়া ঝরা পাতার পরোক্ষ ও প্রচ্ছন্ন হাতছানি। আহা সোঁদা গন্ধের বকুল তলা আমার! বন্ধ চোখের অন্ধ অপারগতায় দূরে সরে থাকি কেবল, নিজের ভেতর বাঁচিয়ে রাখি এককালে বুকভরে টেনে নেওয়া সুবাসের আবদার।

 

You don’t need to be perfect to make a difference in someone’s life, just be there and care a little—I think that’s enough.

জন্মদায়ী ক্ষণ ও তিথি গো! মা ও মাতুল, পিতা ও বিধায়ক গোত্রকূল, ভাই-বন্ধু-পরিজনসহ সমস্ত নেতিবাচক মন্ত্রণারে ডেকে বলি কানে কানে—সেই যে নিজ গর্ভ ও ঔরসজাত সন্তানকে জন্ম দিয়েই করে দিলে মোহরাঙ্কিত রাশিচক্র! ঘোষণা করে দিলে, ‘কন্যাকাল’ কি ভীষণ ভারী, পরিহারযোগ্য বিশেষণ এক! অন্ধপাখির মতন আজীবন অন্তর ও আলেখ্যব্যাপী তাক করে আছি স্নেহাকাঙ্ক্ষী তূণ এক, বারবার যে বিফল কাঙ্ক্ষার দোরে ঠোকর খেতে খেতে হারিয়ে ফেলেছে সূচাগ্রের তীক্ষ্ণতা। স্নেহবৃক্ষের এতখানি দৈন্যদশায় নিজের জন্মের কাছে হেট হয়ে আসে মন ও মনন। অথচ এই ফেমিনাইন জেন্ডারটিকেই জাতবৈষম্য থেকে মুক্তি দিয়ে খুব ক্ষুদ্র ও সামান্য মনোযোগ দিলে, তার জন্মাবধি তৃষিত মন ও জ্ঞানে ধ্যানে যে স্নেহবঞ্চিত মরুভূমির বিস্তৃতি হয়েছে প্রতিদিন সুদূরবর্তী সেই ধোঁয়াশা দিগন্তবৃত্তাবধি, তাতেই ফুটে উঠত প্রস্তরভেদী গাঢ় লাল, সবুজ, হলুদ অসংখ্য ডেজার্ট রোজেস ও ওয়েসিস সমগ্র। ওই সামান্য দানে কি কমে যায় নাড়ির ঋণ, টান পড়ে স্নেহফল্গুধারার প্রবাহ!

 

Sometimes you have to try not to show how much you care even though you do. Because sometimes you mean nothing to someone who means everything to you…

এত এত নৈরাশ্যেও কখন বুকের ভেতর হিজল ও পাকুড়ঘেরা ছায়াঘন দিঘির পাড়ে ডেকে ওঠে ডাহুক—ঘুঘুর মন কেমন করা ডাক, দুমড়ে মুচড়ে ওঠে বুক; দুদ্দাড় করে দৌড়ে গিয়ে নিজের মুখ দেখতে চেয়েছি নিথর শান্ত স্ফটিক জলে। আপাদমস্তক কেঁপে ওঠা বিবর্ণ কালচে নীল শরীর জানে, জলে ফুটেছে ভিন্ন ছায়া। মনদিঘির ছলছল জল সে লজ্জায় ফুলে ওঠে, কেঁপে যায়, প্রতিবিম্বের মুখ চেনার আগেই জল বৃত্তের অভিশাপ বয়ে নিয়েই ছড়িয়ে পড়ে অগণিত ঢেউয়ের বাহানায়। অস্পষ্ট অবয়ব ধীরপ্রশান্ত পায়ে এগিয়ে এসে প্রকট হয় কল্পমধ্য আলোকবর্তিকার আচ্ছাদন শতচ্ছিন্ন করে। আহা ভালোবাসা! কাঙ্গালের মতন পেতে রাখো মনঃপ্রাণ, তার পথে বিছিয়ে দাও দৃষ্টি সবুজ মখমলের মতন! ‘কেন আরও বেশি বাসতে পারি না’র দায় এড়াতে ভুলে যাও নিজেকে! যাপনকৃত আয়ুষ্কাল শিখিয়ে এনেছে যারে, ভালোবাসা মানেই নিজেকে অগ্রাহ্য করে—ভুলে যাওয়া নিজস্ব অস্তিত্বের নাম। ভালোবাসা মানেই অপেক্ষা ও উপেক্ষার সর্বনাম। তারপর একদিন দ্বিতীয়পক্ষ যখন নিশ্চিত হয়ে যায় প্রথমপক্ষের আবেদনে সাড়া দেবার মতন একজনও বিচারক নেই, নেই নিদানের কালে সাক্ষী দেবার মতন একটিও বোবাকালা মানুষ, নেই সরকারপক্ষ থেকে নিয়োগকৃত একজনও উকিল, যিনি হার নিশ্চিত জেনেও একবার এসে দাঁড়াবে বিচারদণ্ডের মুখোমুখি…

তারপর? পাঁজরের এ-হাড় থেকে ও-হাড়ে উড়েউড়ে ঘুরেঘুরে অভ্যন্তরীণ সকল আর্দ্রতা শুষে নিয়ে ওপর থেকে তিন নম্বর অস্থিতে গিয়ে বসে সেই লম্বালেজের সাদা ফিঙ্গে। ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ঠুকরে খায় বিক্ষত বিবর্ণ হয়ে আসা গাঢ় লাল হৃদয়ের বাদবাকি অংশ, তারপর উড়ে যায় আরেকটি ক্রমান্বয়ে লাল হতে থাকা তীব্র গোলাপি হৃদয়ের সন্ধানে।

 

‘No matter what the question is, love is the answer and It’s written on angel’s wings’. thereafter, life can be complicated, but I have learned happiness is really pretty simple.

অগণিত রাত্রিকাল আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে থেকে জীবনের অর্থ ও উত্তর খুঁজতে গিয়ে চিনেছি কালপুরুষ; চিত্রলেখ, অনিরুদ্ধ আর ঊষা কে ডাকতে ডাকতে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে থাকি, সন্ধ্যা সেই সুযোগে আরও এক যাপনের রাত্রির দিকে অপলক ছুটে যায়। আকাশের কার্নিশটাকে আরও একটু সরিয়ে দিলেই উন্মুখ হয় শূন্য পরিসর। আদ্রায় মুষ্টিবদ্ধ খোলা তরবারি যেন কেড়ে নিতে আসে শ্বাস, সিংহের সোনালি কেশর দুলতে থাকে বাতাসে, আর কার্তিকেয় ঢাল বাগিয়ে এগোয়। সাথে রাজদণ্ড হাতে—উইম্যান ওয়ারিওর। তার কোমরবন্ধের নিচে ডান দিকে কার্তবীর্য, বাঁয়ে বাণরাজা রিগেল ঘায়েল করে রাখে সমস্ত পূর্বাকাশ; নির্নিমেষ বিষুবে শেষ শরৎ থেকে প্রারম্ভিক বসন্তে। সে অতিদানব নীলাভ্র সাদা কায়া এক প্রাণপণ গেঁথে রাখে নিজের সমগ্র সত্তা; আমার মতন মাঝসমুদ্রের দিগ্‌ভ্রান্ত নাবিকের জন্য। আর সেই তিন সখা বায়ু হতে ঈশানে ফিরিয়ে রাখে মুখ ও অপরাপর বিন্যাস।

ও আদমসুরাত! তোমার বিন্যাসের নিচে মহাকাশে এত ঝড়, পদতলে সহস্র আলোকবর্ষ আর এই যে অধঃ হতে এমন এক জোড়া চোখ! তবুও অটল হয়ে রও, ডাকি—সুমেরীয় সেই জাহাজের মতো, ডাকি—পলিনেশীয় আদুরে বেড়ালের দোলনার মতো; নেমে এসো ধরায়। খসে পড়ুক সমস্ত সাজ সাজ উল্কা, জ্বলে যাক আশ-পড়শি নক্ষত্রেরা—
এসো…

…তোমার সপ্ত অঙ্গের সাথে এটে দিই জিউ (Xiu) নামমোহর প্রতীক। অরিওন অরিওন জপে ওষ্ঠাগত করি প্রাণ। দিনমানকাল বছর ব্যাপী এই চন্দ্র-গ্রহ-তারায় ভালোবেসে দেখেছি, সৌন্দর্যের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকর্ম মানব জাতের মতন কোনো প্রতিদান চায়নি মহাকাশ। এভাবেই বুঝেছি অবিরত মন্দ্র ভালোবাসায় অসহ্য সান্দ্র সুখের প্রকাশ, সুখী হতে পারার অধ্যায় সবচেয়ে সহজ, সাধারণ।

 

Dear God or whatever else there is! I’m seriously so thankful for everything. I felt deprived, I was all broken, then I have learned how and whom I would love. No matter they can’t talk, no matter how far the sky is, no matter they can’t wipe your tears when you cry. And also, I loved you- I did, I love you- I do. will always…

এই যে রাত, প্রিয়তমর মতো হাত ধরে বসে থাকে পাশে, দিনের বাধ্যকতা না থাকলে সে কি যেত ছেড়ে একবার! তারপরও ফিরে ফিরে আসে, বসে থাকে কবন্ধ নাবিকের মতন। আর রাত্রি পারমিতার চোখে জ্বালিয়ে যায় দূর দূর দূর মাঝ সমুদ্দুর হতে হাতছানি দিয়ে যাওয়া ছায়া ছায়া জাহাজের মাস্তুলে লটকে থাকা আলো, পাহাড়ের চূড়োয় ঘুর্ণায়মান লাইটহাউজের হাজার ওয়াট দ্যুতি। রাতের প্রথম প্রহরে খুলে রাখা ঘুম তুলে রাখি পরম আদরে, আর সুবহে সাদিকের আগে অতল গহিন ঘুমে ঘুমিয়ে যাওয়া, ঘুমন্ত ঘুমের নিশ্চিন্ত মুখাবয়ব দেখে ভুলে যাই তাকে ডেকে নিত কাছে…

 

Then I Touch my frozen heart, With all my promises. Whisper words of love again, let me reach inside, let me be myself, through all my tears and pride. And then melt the cold within…

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

জন্ম ও পড়াশোনা ঢাকায়। সম্পাদনা ও প্রকাশনার সাথে জড়িত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ তিনটি। ১. ‘একদিন ঠিক হেঁটে যাবো’, ২. ‘হাওয়াকল’ ৩. ‘ওয়ালথার পিপিকে’।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।