শুক্রবার, এপ্রিল ২৬

হাওয়াই মিঠাই ও অন্যান্য কবিতা : শৈবাল নূর

0

প্রেমের কবিতা


তোমার শূন্যতা জুড়ে শিমুলফুল ফোঁটে

একটি শূন্যতা নিয়ে এঁকে চলি চৈত্রের দুপুর

সমস্ত শহর যেন জুম্মাবার, অনাবৃত নজরুল সরণি

মান্না দে’র গানের মতো দেবালয় হয়ে বাঁচি একা, অশ্রুযাপন—

প্রেমের কবিতা আমি লিখতে পারি না!

হাতে লেখনী, মাথায় শুধু রক্তজবা—


হাওয়াই মিঠাই


পাতার আয়নায় কতটা ছায়া ধরে?
কতটা নিঃশব্দে পা ফ্যালে গুপ্তচর?

তুমি হয়তো, সারাক্ষণ কবিতার ভ্রুণ মাথায় নিয়ে ঘোর।
চুলের ক্লিপ, চিরুনির দাঁত, সাজসজ্জা বা প্রসাধনী
ওসব ফেলে, কাঁচা কাঠের গন্ধে আমি মন হারিয়ে ফেলি!

এই যে তুমি, সারাদিন মেঘের মতো ধাবমান…
সুগন্ধির মতো পাগল করো কথায়!

আমি শুধু শুনেই ধন্য হই। মাঝে মাঝে বন্য হই।

পাখিরা স্বাধীন হলে, আমি হয়ে যাই উড়ন্ত তুলো…!


আম্মা


মা’র আঁচলের শীতলতা জুড়ে, মন্দাকিনী—

তার চেয়ে বরং মন খারাপের দিনটা নিয়ে কথা বলি।
মা’র ঔষুধের খালি পাতাগুলো আমার পকেটে
নিস্তব্ধ ভস্ম হবার পাশে ডাকছিল দুপুরের ঘুঘু!

দূরের হেমন্ত ধরে অজ্ঞাত এক নারীকে সাথে নিয়ে
বাবা ফিরছেন। দু’চোখ থেকে খসে পরছে মা’র অসুস্থ শরীর—


যামিনীর জন্য


অন্তহীন ভোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, ত্যাগ শুধুই কি মুখরোচক?

অনন্তের ক্যালেন্ডার থেকে তোমার আমার
ডাটা-ট্রান্সফারের মুঠোয় বন্দি হচ্ছে রিপুর মোহ, ব্রহ্মকথা

শিক্ষাব্যবস্থার মিথ্যে সারাংশের মতো, অর্থহীন
রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির মতো, আমার পাঠানো সকল
ইমোজি, ক্ষুদেবার্তা তোমার দয়ার দিকে অসহায়
তাকিয়ে থাকবে না তো—

গোপন পিন-নম্বর ভুলে যাবার ভয়ে, তোমার চোখের
পরিভাষায় অনির্দিষ্ট ছয়টি পলক আমার জীবনের
গুপ্তসংকেত হয়ে মৌমাছিদের রহস্য হয়ে উঠতে চাইছে

তথ্যের সহজ দুনিয়াতে, সুলভ বহুগামিতার মাঝে
আমার প্রেমের পরীক্ষা কি হাবিল কাবিলের কোরবানির মতো নয়?

তোমাকে ভালোবেসে পৃথিবীর প্রথম হত্যাকারী হতে পারি

ইবলিসের কি আর ইমানচ্যুত হবার ভয় আছে—?


অবিনশ্বর


কতদূর থেকে ডেকে চলেছি
শুনতে পাও তুমি?

স্মৃতি প্রেমসহায়ক

কোনো স্মৃতি নেই, নিশা—
মর্মে তোমার আঘাতের চিহ্ন কেবল

তুমি তো শুধুই এক বিশ্বাসের নাম, অনন্ত আধার—

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

কবিতা লেখেন মূলত; পাশাপাশি গদ্য লিখতে চেষ্টা করেন। প্রকাশিত বই: যামিনী ও মরমী ধনুক ( কবিতা)।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।