শুক্রবার, এপ্রিল ১৯

নীলাপক্ষ ও অন্যান্য কবিতা : চন্দ্রশেখর

0

পাখি


পাখির কোনো সামাজিক, রাষ্ট্রীয় স্বত্ব নেই;
তবু তার যখন খুব ইচ্ছে হয়, সুদূর সাইবেরিয়া থেকে
বাংলার কাঙ্ক্ষিত বিলে এসে সাঁতার কেটে যায়।

আমারও তেমনি পাখি-স্বভাব,
আমারও কোনো সামাজিক, রাষ্ট্রীয় স্বত্ব নেই;
তবু আমার যখন খুব ইচ্ছে হয়,
আমার প্রিয় তুমিটার কাছে
মনে মনে পাখি হয়ে যাই…


নীলাপক্ষ


জ্যোৎস্নার চেয়ে বেশি স্নিগ্ধতায়
আমাকে প্লাবিত করো রোজ।
অমাবস্যার চেয়ে গাঢ় অন্ধকারে
আমাকে সমূলে অধিকার করো।
আমার কোনো শুক্লপক্ষ, কৃষ্ণপক্ষ নেই;
আমার কেবল নীলাপক্ষ!


শব্দালংকার


বাংলা শব্দাবলী দিয়ে
একদিন, তোমার সারা গায়ের
অলংকার বুনে দেবো।
সক্ষমতা নেই বলে নয়,
আপাদমস্তক কাব্যময় তুমিটাকে
হীরে জহরতের চেয়ে
বাংলা শব্দালংকারেই
আরও বেশি সুন্দর দেখাবে!


প্রাচীন ওঝার মতো


তোমার অসুখের খবরে
আমার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না চলে আসে।
আমি পুরুষ মানুষ, পুরুষ মানুষের কাঁদতে নেই,
একথা তখন থাকে না আমার মনে।
গোটা গন্ধমাদন উঠিয়ে এনে
বিশল্যকরণী জোগানোর সাধ্য নেই;
তবু তোমার সব অসুখ,
প্রাচীন ওঝার মতো, ঠোঁট দিয়ে নিতে চাই শুষে…!


আত্মিক যোগ


শ্রীহট্ট ঢাকাকে ভালোবাসে,
শ্রীহট্ট ঢাকাকে চায়।
ঢাকার সঙ্গে শ্রীহট্টের ব্যবধান আড়াইশ মাইল,
যা সহজে অতিক্রম্য নয়।
শ্রীহট্ট কোনোদিন স্কুলের বেঞ্চে, দেয়ালে, টাকায়
লিখেনি অমুক প্লাস অমুক; তার কাছে
সবসময় সেসব ছিল নিম্ন রুচির প্রতীক।

শ্রীহট্টের সে ধারণা এখন পাল্টায়। তার
ইচ্ছে হয়, আড়াইশ মাইল লম্বা একটা প্লাস লিখে,
ঢাকাকে শ্রীহট্টের সঙ্গে জুড়ে দেয়। তার ইচ্ছে
হয়, সারা পৃথিবীকে জানিয়ে দেয়
ঢাকার সঙ্গে শ্রীহট্টের নিবিড় আত্মিক যোগ!

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

জন্ম বলরামপুর, শাল্লা, সুনামগঞ্জ। প্রকাশিত কবিতার বই একটি। ‘কেবল একটি কবিতা’ (২০২১)।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।